নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি। দেশের প্রথম ও একমাত্র নারী প্রধান বিচারপতি এবার বিক্ষুব্ধ জেন জি তরুণদের পছন্দে দেশের নেতৃত্বে এলেন। সাম্প্রতিক বিদ্রোহে সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি পদচ্যুত হওয়ার পর ভার্চুয়াল বৈঠকে ভোটাভুটিতে কার্কি পান ৩১ শতাংশ সমর্থন। খুব সামান্য ব্যবধানে তিনি এগিয়ে যান কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন শাহর থেকে, যিনি পেয়েছেন ২৭ শতাংশ ভোট।
কার্কির আইনজীবী হিসেবে পথচলা শুরু হয়েছিল ১৯৭৯ সালে বিরাটনগরে। ধাপে ধাপে তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হন ২০০৯ সালে। ২০১৬ সালে নেপালের প্রথম নারী হিসেবে প্রধান বিচারপতির আসনে বসেন। সেই সময় নেপালের প্রেসিডেন্ট, সংসদের স্পিকার ও প্রধান বিচারপতি- তিনটি শীর্ষ পদেই ছিলেন নারী।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করে একাধিকবার শিরোনামে উঠেছেন। একটি মামলায় কার্কি তৎকালীন মন্ত্রী জয়া প্রকাশ গুপ্তকে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই রায়ে দেশজুড়ে সাড়া ফেলে ওই সময়।
শিক্ষাজীবনও কম উজ্জ্বল ছিল না। ১৯৭৫ সালে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পলিটিক্যাল সায়েন্সে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পান। ১৯৭৮ সালে ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনের স্নাতক হন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়েই তিনি নাচ শিখেছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি নাচের প্রতি তার ভালবাসা একসময় জীবনের বড় অংশ হয়ে উঠেছিল।’
তবে কর্মজীবন একসময় ঘূর্ণিঝড়ের মতো চাপ এনেছিল তার ওপর। ২০১৭ সালে ক্ষমতাসীন জোট কার্কির বিরুদ্ধে অভিশংসনের প্রস্তাব আনে। অভিযোগ ছিল, পুলিশ প্রধানের নিয়োগে তিনি পক্ষপাতিত্ব করেছেন এবং বিচারপতির সীমা ছাড়িয়ে গেছেন। প্রবল রাজনৈতিক চাপে পড়েও তিনি আপস করেননি। স্বাধীন বিচারব্যবস্থা ও সংস্কারের পক্ষে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছিলেন শেষ পর্যন্ত।
কেন জেন জেড প্রজন্ম কার্কিকে বেছে নিলো?
আন্দোলনের মূল সুরই ছিল দুর্নীতি, স্বজনপোষণ এবং সরকারি সেন্সরশিপের বিরুদ্ধে ক্ষোভ। তাদের অভিযোগ ছিল, দুর্নীতি ঢাকতেই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যান করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কার্কির দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব এবং আপসহীন ভাবমূর্তিই হয়তো তাকে সকলের পছন্দের তালিকায় জায়গা করে দিয়েছে।
সূত্র : দ্য ওয়াল