31.2 C
Bangladesh
Thursday, September 18, 2025
Homeনির্বাচননমিনেশনরাকসুর মঞ্চে নতুন ইতিহাস

রাকসুর মঞ্চে নতুন ইতিহাস

Date:

spot_imgspot_img

দীর্ঘ ৩৫ বছর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) ও সিনেট নির্বাচন এক ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। এই নির্বাচনে বিভিন্ন প্যানেল থেকে সহসভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস)—শীর্ষ এই তিন পদেই লড়ছেন সাত নারী প্রার্থী। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় সংসদ ও সিনেট মিলিয়ে মোট ১৯টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩২ জন ছাত্রী। অন্যদিকে, ছাত্রী হলগুলোতে ১৫টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন ২১৭ জন নারী প্রার্থী।

রাকসু নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, এবারের নির্বাচনকে ধরা হচ্ছে রাকসুর ইতিহাসে সর্বোচ্চ প্রার্থীর অংশগ্রহণ হিসেবে। কেন্দ্রীয় সংসদ ও সিনেটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৩২০ জন প্রার্থী, আর হল সংসদে রয়েছেন ৭৫৪ জন। এর মধ্যে ২৮৮ জন ছাত্র আর ৩২ জন ছাত্রী।

রাকসুর ৬৩ বছরের ইতিহাসে কখনো কোনো নারী ভিপি নির্বাচিত হননি। জিএস ও এজিএস পদেও নারীদের প্রার্থিতা বা জয়ের নজির খুব সীমিত। তবে এবার শীর্ষ তিন পদেই নারী প্রার্থীদের উপস্থিতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন প্রত্যাশা তৈরি করেছে।

শীর্ষ ৩ পদে লড়ছেন যে নারী প্রার্থীরা: রাকসুর ইতিহাসে প্রথম নারী ভিপি প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাসিন খান। তিনি ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলের প্রার্থী। ‘রাকসু ফর র‍্যাডিকেল চেঞ্জ’ প্যানেল থেকে জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আফরিন জাহান, ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল থেকে জিএস পদে লড়বেন নুসরাত জাহান নূপুর, ‘অপরাজেয় ৭১, অপ্রতিরোধ্য ২৪’ প্যানেল থেকে জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন পরমা পারমিতা, স্বতন্ত্র থেকে জিএস পদে লড়ছেন আছিয়া খাতুন। এদিকে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলে এজিএস পদে লড়ছেন জাহিন বিশ্বাস এষা ও ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলে এজিএস পদে জান্নাত আরা নওশীন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

এ বিষয়ে রাবির সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ত্বাসীন সিদ্দিকা রূপা বলেন, ‘রাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ৩৫ বছর আগে। এই দীর্ঘ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক কিছু বদলে গেছে। নারীরা এখন নেতৃত্বের আসনে উঠছে, আর সেই পরিবর্তনের প্রতিফলন আমরা এবার রাকসু নির্বাচনে দেখতে পাচ্ছি।’

কোন প্যানেলে কতজন নারী:

প্যানেলগুলোর মধ্যেও নারী প্রার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো। ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল এবং ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’ উভয়টিতেই রয়েছেন সর্বাধিক চারজন নারী প্রার্থী।

ছাত্রশিবিরের ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’, ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী জোট’ এবং ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ এই তিন প্যানেলের প্রত্যেকটি রয়েছেন তিনজন করে নারী প্রার্থী। ‘অপরাজেয় ৭১-অদম্য ২৪’ ও ছাত্র অধিকার পরিষদের ‘রাকসু ফর র‍্যাডিকেল চেঞ্জ’ এ দুই প্যানেলের প্রতিটিতে রয়েছেন দুজন করে নারী প্রার্থী। বামপন্থি ছয়টি সংগঠনের ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’ এখানে আছেন একজন নারী প্রার্থী।

তবে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের প্যানেল ‘সচেতন শিক্ষার্থী জোট’ কোনো নারী প্রার্থী রাখেনি।

সবচেয়ে আলোচিত নাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক তাসিন খান, যিনি রাকসুর ইতিহাসে প্রথম নারী হিসেবে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

সাইবার সুরক্ষায় নারী প্রার্থীদের ৭ দফা দাবি:

সাইবার সুরক্ষায় বট বা ভুয়া আইডি নিয়ন্ত্রণ, গ্রুপ অ্যাক্সেস যাচাইসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসুর) নারী প্রার্থীরা। গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানান তারা।

দাবিগুলোর মধ্যে অফিসিয়াল সুরক্ষা নীতি প্রণয়ন, নারীবান্ধব অবকাঠামো ও সুরক্ষা, সাইবার সেফটি ও জেন্ডার রেসপন্স সেল গঠন, বট বা ভুয়া আইডি নিয়ন্ত্রণ ও গ্রুপ অ্যাক্সেস যাচাই, গোপনীয়তা সুরক্ষা নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, ডিজিটাল লিটারেসি ও সেফটি প্রশিক্ষণ এবং ভেরিফায়েড অফিসিয়াল চ্যানেল তথ্যের নির্বিঘ্ন ও পেশাদার প্রবাহ নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগ, হল ও প্রশাসনিক ইউনিটের জন্য ভেরিফায়েড সোশ্যাল মিডিয়া পেজ বা গ্রুপ চালু করার দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রাকসু নির্বাচনে ভিপি প্রার্থী তাসিন খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে অংশীজনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সুস্পষ্ট কোনো সাইবার নীতিমালা নেই, বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে খোলা বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ, পেজ ও মেসেঞ্জার চ্যাটে বিভ্রান্তিকর তথ্য, গুজব, চরিত্রহনন এবং ব্যক্তিগত আক্রমণমূলক তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এসব উদ্বেগের বিষয়ে বারবার জানানোর পরও এখনো তারা নির্বিকার। রাকসু নির্বাচনকেন্দ্রিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত সেলের কার্যক্রম এখন পর্যন্ত আমরা দেখতে পাইনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নারীবিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী সামসাদ জাহান, সহকারী নারীবিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী নাদিয়া হক বীথি, সহকারী পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক প্রার্থী লুবনা শারমিন, কার্যনির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী তামান্না আক্তার, জুলাই-৩৬ হলের জিএস পদপ্রার্থী এস এন শোভা ও এজিএস পদপ্রার্থী মহিমা ইসলাম।

Related News

চার দাবিতে কর্মসূচিতে যাচ্ছে জামায়াত, এনসিপিসহ আট দল

অবিলম্বে জুলাই সনদের বাস্তবায়নসহ চার দফা দাবিতে যুগপৎ কর্মসূচিতে...

উচ্চকক্ষ হোক জবাবদিহিমূলক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও চিন্তাশীল গণতন্ত্রের একটি দৃঢ় স্তম্ভ।

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে,...

অনিশ্চয়তায় জুলাই সনদ বাস্তবায়ন

শেষ মুহূর্তে এসে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে দেখা...