সারা বিশ্বে যখন অর্থনৈতিক সংকট চলছে, তখন শীর্ষ ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে। চলতি বছর বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের সম্পদের পরিমাণ আরও বেড়েছে। তাই ধনী হওয়ার জন্য ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে না থেকে, বরং নিজস্ব মেধা আর শ্রমের সমন্বয়ে সম্পদ বাড়ানোর দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
আসুন জেনে নিই, এমন কিছু কাজ সম্পর্কে যা অনুসরণ করলে সহজেই ধনী হওয়া যায়:
অল্প বয়সেই বিনিয়োগকারী হয়ে উঠা এবং ধারাবাহিকতা বজায় রাখা
সম্পদ বাড়ানো বা বড়লোক হওয়ার জন্য কোনো নির্দিষ্ট বয়স নেই। যতদ্রুত সম্ভব নিজেকে বিনিয়োগকারী হিসেবে প্রস্তুত করে তুলতে হবে। প্রয়োজনে ছোট কিছু দিয়েই এ বিনিয়োগের হাতেখড়ি করা যায়। আস্তে আস্তে স্টক, বন্ড, মিউচুয়াল ফান্ড এবং অন্যান্য আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে সবচে গুরুত্বপূর্ণ হলো ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। ধারাবাহিকভাবে নিজেকে উচ্চতার চরম শিখরে নিয়ে যেতে হবে।
আয়ের একাধিক উৎস তৈরি
শুধুমাত্র চাকরি কিংবা একটি নির্দিষ্ট ব্যবসার ওপর নির্ভর করে থাকলে ধনী হওয়ার স্বপ্ন পূরণ সম্ভব নয়। আয়ের উৎস বাড়াতে হবে। সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে হবে। আশপাশের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বাড়তি আয় করা যায় কি-না, সেদিকে সবসময় লক্ষ রাখতে হবে। এক্ষেত্রে চাকরির পাশাপাশি একটা ছোট ব্যবসা করা যেতে পারে, ফ্রিল্যান্সিং কাজ করা যায়, অন্যান্য সম্পদ যেমন – জমি, ফ্ল্যাট, ঘর ইত্যাদি ভাড়া দিয়ে আয়ের উৎস বাড়ানো যায়। পাশাপাশি লভ্যাংশ দিচ্ছে, এমন যে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর শেয়ারবাজারে টাকা লাগানো যেতে পারে।
খরচ কমাতে বাজেট তৈরি
মাসিক খরচ কমাতে একটি বাজেট তৈরি করা যেতে পারে। বাজেট থাকলে সহজেই প্রতিমাসের বা নির্দিষ্ট সময়ের সমস্ত খরচ এবং খরচ কমিয়ে টাকা জমানোর উপায়গুলো খুঁজে বের করা সম্ভব। বাজেট তৈরির ক্ষেত্রে মূল প্রাধান্য থাকা উচিত – খরচ কমিয়ে টাকা সঞ্চয় এবং অন্য কোনো ব্যবসায় বিনিয়োগ করা।
নিজের ওপর বিনিয়োগ করা
দক্ষতা ও জ্ঞান বাড়াতে নিজের ওপরও বিনিয়োগ করতে হবে। অতিরিক্ত আয় করার জন্য যে মেধা ও জ্ঞান প্রয়োজন, তা বাড়াতে পড়াশোনা, ট্রেনিং, অথবা যে কোনো ব্যক্তিগত উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ করা যেতে পারে। প্রয়োজনে অতিরিক্ত মাস্টার্স করা, বিভিন্ন কর্মশালায় অংশ নেয়া এবং নতুন কোনো কিছু শিখতে কোর্সে ভর্তি হওয়া — এগুলোর মাধ্যমে নিজের গুণাগুণ বৃদ্ধি করা। এতে ভবিষ্যতে আয় বাড়ানোর পথ আরও প্রশস্ত হয়।
নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা
যথেষ্ট সম্পদ বাড়াতে বা ধনী হয়ে উঠতে নিজস্ব ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের কোনো বিকল্প নেই। স্থানীয় বাজারের চাহিদাগুলো খুঁজে বের করে, তা সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। পরবর্তীতে এ বিষয়ের ওপরই একটা ব্যবসা দাঁড় করাতে পারলে, সেই ব্যক্তির এগিয়ে যাওয়া কেউ আটকাতে পারবে না। তবে ব্যবসা ভালো না বুঝলে, অন্তত যে কোনো লাভবান প্রতিষ্ঠান, স্টার্ট-আপ বা ছোট ব্যবসায় টাকা বিনিয়োগ করে বসে থাকলেও অতিরিক্ত আয় করা সম্ভব।
এক্ষেত্রে আরেকটি অতিরিক্ত পরামর্শ গ্রহণ করা যায়। নেটওয়ার্ক ও সম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে কাজের সুযোগ বৃদ্ধি করা যেতে পারে। নেটওয়ার্ক ভালো থাকলে নতুন নতুন পার্টনারশিপ এবং ভালো ও লাভবান হওয়ার পরামর্শক পাওয়া যায়। এছাড়া নির্দিষ্ট ক্ষেত্রের সফল এবং ধনী ব্যক্তিদের যতটা কাছাকাছি থাকা যায় ও তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নেয়া যায়, তত দ্রুত আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।