32.2 C
Bangladesh
Thursday, September 18, 2025
Homeনির্বাচনজাকসু নির্বাচনজাকসু ভোটে নাটকীয়তা

জাকসু ভোটে নাটকীয়তা

Date:

spot_imgspot_img

দীর্ঘ ৩৩ বছর পর অনুষ্ঠিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ফলাফল ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ও আগ্রহ চরমে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি হলে মোট ২১টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়। শান্তিপূর্ণভাবে ভোট শেষ হলেও এর প্রায় ২৪ ঘণ্টা পরও ফলাফল ঘোষণা না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। অনেক শিক্ষার্থী ও প্রার্থীদের ফলাফলের জন্য সারা দিন নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করতে দেখা যায়। এদিকে গতকাল বিকেল ৫টার দিকে হল সংসদের ভোট গণনা শেষ হলেও কেন্দ্রীয় সংসদের ভোট সন্ধ্যা ৭টার পর হতে গণনা শুরু হয়। রাতের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ ফল প্রকাশের বিষয়ে জানিয়েছেন জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব অধ্যাপক এ কে এম রাশেদুল আলম।

এর আগে মেশিন পদ্ধতিতে ভোট গণনা হওয়ার কথা থাকলেও ভোটের দিন ছাত্রদলসহ কয়েকটি বামপন্থী সংগঠনের দাবির কারণে নির্বাচন কমিশন ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট গণনার সিদ্ধান্ত নেন। ভোটগ্রহণ শেষে রাত ১০টার দিকে গণনা শুরু হয়ে দীর্ঘ ২০ ঘণ্টা ধরে চললেও ফলাফল প্রস্তুত হয়নি। জানা গেছে, নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক সুলতানা আক্তার ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোটগণনা করতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি ওএমআর মেশিন পদ্ধতিতে ভোটগণনার দাবি জানান। পরবর্তীতে জাকসুর সভাপতি নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের সাথে দেড়ঘণ্টা বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনিরুজ্জামান ম্যানুয়াল পদ্ধতিতেই ভোট গণনার ঘোষণা দেন।

ফল প্রকাশে বিলম্বের প্রতিবাদ প্রার্থীদের : ভোটগণনা সম্পন্ন এবং ফলাফল প্রকাশে দেরি হওয়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন ছাত্রশিবির ও বাগছাস সমর্থিত প্যানেলসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। গতকাল দুপুরের পর থেকেই নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে সামনে তাদের জড়ো হতে দেখা যায়। এ সময় প্রার্থীদের বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। দ্রুত নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ না করতে পারলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেন প্রার্থীরা। এ সময় ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম বলেন, অবান্তর কিছু যুক্তি এনে নির্বাচনকে বানচাল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যেখানে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছেন, সেখানে কিছু প্রার্থী বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নির্বাচন বর্জন করেছেন। দ্রুত নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ করতে না পারলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা করবেন বলে জানান তিনি।

পাঁচটি হলের ফলাফলের আংশিক তথ্য : রাত ৯টা পর্যন্ত পাওয়া খবরে হল সংসদের মধ্যে পাঁচ হলের ভিপি ও জিএস পদে নির্বাচিতদের তথ্য অনানুষ্ঠানিকভাবে পাওয়া গেছে।

নির্বাচনে মীর মশাররফ হোসেন হলের ভিপি পদে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জুবায়ের শাবাব। তিনি ১৫১ ভোট পেয়েছেন। জুবায়ের শাবাব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। এ ছাড়া জিএস পদে জয় পেয়েছেন শাহরিয়া নাজিম রিয়াদ। তার প্রাপ্ত ভোট ১৯২।

শহীদ সালাম-বরকত হলে ভিপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন ৪৯তম ব্যাচের রসায়ন বিভাগের মারুফ, জিএস পদে মো: মাসুদ রানা মিষ্টু।

১০ নম্বর ছাত্র হল (সাবেক মুজিব হল) ভিপি পদে নির্বাচিত হয়েছে আসিফ মিয়া, জিএস পদে নির্বাচিত হয়েছেন মেহেদি হাসান, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলে ভিপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন মো: রাকিবুল ইসলাম, জিএস পদে নির্বাচিত হয়েছেন আলী আহমদ এবং আ.ফ.ম. কামালউদ্দিন হল সংসদ ভিপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন দর্শন বিভাগে জি এম রায়হান কবীর ও জিএস পদে আবরার শাহরিয়ার।

এ ছাড়াও আলবেরুনি হলে ভিপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন মুন্তাসির খান অর্পণ।

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে : শিবিরের জিএস প্রার্থী : জাকসু নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম। নির্বাচন বানচালে বিএনপিপন্থী দুই শিক্ষক ইন্ধন দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। গতকাল বিকেলে জাকসু নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের প্যানেলের অন্য প্রার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন।

মাজহারুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটায় ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। ভোট গ্রহণের একদিন পার হলেও ভোট গণনা শেষ হয়নি। তিনি বলেন, ‘এখানে সুস্পষ্টভাবে আমরা ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত পাচ্ছি। আমরা ভোটের আগের দিন থেকে প্রশাসনকে বিভিন্নভাবে বলে আসছিলাম যে কোন জায়গাগুলোতে লুপ হোল রয়েছে, কোন জায়গাগুলোতে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, সেগুলোর স্বচ্ছতা নিশ্চিত করেন। আমরা একটি ফেয়ার নির্বাচন চাই, শিক্ষার্থীরা যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দেবেন, কিন্তু আপনারা ফেয়ার নির্বাচন করেন।’ এই জিএস প্রার্থী বলেন, ‘নির্বাচনে নানা ধরনের অব্যবস্থাপনা ছিল। পোলিং এজেন্ট, অতিরিক্ত ব্যালট পেপার, নির্ধারিত সময়ে ভোট গ্রহণ শুরু না হওয়াÑ এ সবকিছুতে অব্যবস্থাপনা আমরা দেখেছি। কিন্তু সেগুলো ছাপিয়ে গেছে ছাত্রদলের আগ্রাসী কার্যক্রম; বাগছাসের ক্রমাগত ব্যাশিং ও মিথ্যাচার।

জামায়াতপন্থী প্রতিষ্ঠান থেকে ওএমআর নেয়ার দাবি মিথ্যা উল্লেখ করে মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘ওএমআর যে প্রতিষ্ঠান থেকে আনা হয়েছে সেটিকে জামায়াত ট্যাগ দিয়ে বাতিলের চেষ্টা করেছে ছাত্রদল ও বাগছাস। জামায়াতপন্থী যদি কোনো কিছু থাকে, আপনারা দেখতে চাইবেন সে যন্ত্রটি ঠিক আছে কি না; সেটা আপনাদের কনসার্ন থাকা উচিত ছিল, কিন্তু আপনারা কনসার্ন জানিয়েছেন সেটি জামায়াতপন্থী কি না। পরবর্তী সময়ে আমরা দেখতে পেয়েছি, সেটি জামায়াতপন্থী নয় বরং বিএনপিপন্থী ছিলেন।’

ওএমআরে ভোট গণনার সিদ্ধান্ত বাতিলের প্রসঙ্গ টেনে শিবিরের ওই নেতা বলেন, ‘তার গ্লানি এখনো আমাদের টানতে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত যারা ভোট গণনা করছেন তাদের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। তারা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বাস্তবিকভাবে কোনোভাবেই আজকের মধ্যে ভোট গণনা করা সম্ভব নয়। ওএমআরের মতো ঠুনকো অজুহাতে ছাত্রদল নির্বাচন বানচাল করতে চায়।’ নির্বাচন বানচালে বিএনপিপন্থী দুই শিক্ষক ইন্ধন দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করে মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন বানচালের ইন্ধন দিচ্ছেন বিএনপিপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম ও অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার (নির্বাচন কমিশনের সদস্য)। অধ্যাপক নজরুল ইসলাম একটি হলের প্রাধ্যক্ষ হয়েও অন্য একটি ছাত্রী হলে ঢুকে মব সৃষ্টি করেন, যার ফলে নির্বাচন কিছুক্ষণ স্থগিত হয়।

ছাত্রদলকে ব্যবহার করে তিনি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। হলের বাইরে অনেক প্রাক্তন শিক্ষার্থীকে দেখা গেলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। মাজহারুল ইসলাম বলেন, এই ক্যাম্পাস কোনো স্যারের গ্রুপের নয়, কোনো দলের নয়। শিক্ষার্থীরা ৩৩ বছর পর হওয়া জাকসু চায়। নির্বাচন বানচাল করার অপপ্রয়াস কোনোভাবেই সফল হতে দেয়া হবে না। কেউ নির্বাচন বানচাল করতে চাইলে তা প্রতিহত করা হবে।

নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ : এবার জাকসু নির্বাচন কমিশন থেকে পদত্যাগ করলেন এক নির্বাচন কমিশনার। নানাভাবে পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ আখ্যায়িত করে ও নিজের মতামত না নেয়ায় সাংবাদিকদের সামনে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। পদত্যাগকারী নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার। শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। এ দিকে দীর্ঘ অপেক্ষার পর জাকসুর কেন্দ্রীয় সংসদের ভোট গণনা শুরু হয়েছে। তবে গণনা করা হচ্ছে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে। সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে কেন্দ্রীয় সংসদের ভোট গণনা শুরু হয়। এর আগে বিকেল ৫টার দিকে ২১টি হল সংসদের ভোট গণনা শেষ হয়। তবে বিজয়ীদের তালিকা এখনো প্রকাশ করা হয়নি। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। পরে বিভিন্ন অসঙ্গতির অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করে ছাত্রদলসহ চারটি প্যানেল ও স্বতন্ত্র পাঁচ প্রার্থী। জাকসুতে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ হাজার ৮৯৭। এর মধ্যে ছাত্র ছয় হাজার ১১৫ এবং ছাত্রী পাঁচ হাজার ৭২৮ জন। এর প্রায় ৬৭-৬৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।

ম্যানুয়ালি গণনায় শিক্ষকদের ক্ষোভ : এ দিকে ম্যানুয়ালি ভোট গণনা করতে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, এভাবে ফলাফল গণনা করতে গিয়ে তারা পেরেশান হয়ে যাচ্ছেন। এমনকি চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌসের মৃত্যুর জন্য নির্বাচন কমিশনের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছেন তারা। নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক সুলতানা আক্তার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ‘যে অমানুষিক পরিশ্রম আমরা করেছি, তার প্রতিদান হলো আমার সহকর্মীর মৃত্যু। আর রেমুনারেশন (সম্মানী) তো কী বলব! এর চেয়ে শ্রমিক হিসেবে কামলা দিলেও ঘণ্টা হিসাবে রেমুনারেশন বেশি পেতাম।’ তিনি বলেন, ‘হলে ভোট নেয়া হয়েছে। তাহলে ভোট কাউন্ট হলে করলে বৃহস্পতিবার রাত ১১টার মধ্যেই রেজাল্ট দেয়া যেত। ২১টি হলে ভোট কাউন্ট হলে সিনেট ভবনে যে ভিড় হয়েছে সেটি এড়ানো যেত। ভোট কাউন্টের বিষয়ে আমাদের নির্দেশনা না থাকায় আমাদের অনেকেই ভোট কাস্ট করে সিনেট ভবনে রাতে ছিলাম। পরে আমি অসুস্থবোধ করায় বাসায় চলে আসি। আমাকে বলা হলো, এখন রেস্ট নাও, রাত ৪টায় ডাকা হবে তোমার হলের কাউন্টিংয়ের সময়। স্ট্রেস এবং চিন্তা নিয়ে আমি ঘুমাতে পারিনি-কখন আবার আমাকে যেতে হয় সিনেট ভবনে।’ অধ্যাপক সুলতানা আক্তার বলেন, ‘গতকাল রাতেই যদি ভোট কাউন্টিং শেষ হয়ে রেজাল্ট হতো, তাহলে আজকে সকালে আমার সহকর্মীর মৃত্যু দেখতে হতো না। আমার প্রশ্ন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কি জান্নাতুল ফেরদৌসের মৃত্যুর দায় এড়াতে পারে? আরো সহকর্মী যে অসুস্থ হবে না তার গ্যারান্টি কে দেবে? হলে ভোট কাস্ট করা হলো; কিন্তু গণনা সিনেট ভবনে কেন?’

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করেছেন অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার : সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট : জাবির জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সদস্য ও জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার নির্বাচন বানচালের চেষ্টা বাস্তবায়ন করতে না পেরে পদত্যাগ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ইসলামী ছাত্রশিবির প্যানেলের এজিএস প্রার্থী ফেরদৌস আল হাসান। একইসাথে ৩০ ঘণ্টা পরে কেন পদত্যাগ করেছেন সেই প্রশ্ন রেখেছেন তিনি। গত রাত ১০টার দিকে জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে ওই অভিযোগ করেন শিবিরের সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের এই প্রার্থী। তিনি জানান, ভোটগ্রহণের এত সময় পরে এসে পদত্যাগ করে তিনি দায় এড়াতে পারেন না। এখন পদত্যাগ করার অর্থ হলো মাঠ থেকে লেজ গুটিয়ে পলায়নের সমান। নির্বাচন বানচাল করার হীন ষড়যন্ত্র প্রকাশ পেয়েছে তার এই পদত্যাগে। এ সময় জাকসু নিয়ে টালবাহানা চলবে না চলবে না বলে স্লোগান দিতে দেখা যায় প্যানেলটির অন্যান্য প্রার্থীদের।

ফলাফল দ্রুত ঘোষণার দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ফলাফল না পাওয়ায় গতকাল সন্ধ্যা ৬টার দিকে নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। তারা দাবি করেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে ফলাফল ঘোষণা করতে হবে।’ এ সময় ভোটগ্রহণের একদিন পরও ফলাফল প্রকাশ না করা অগ্রহণযোগ্য বলেও মন্তব্য করেন তারা। শিবির-সমর্থিত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম মাজহার বলেন, ২১টি হলের ভোট গণনা শেষ হওয়া সত্ত্বেও এখনো জাকসুর ভোটগণনা শুরু হয়নি। এটি জাকসু বন্ধের পাঁয়তারা। আমরা দাবি জানাচ্ছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে ভোট গণনা করে ফলাফল দিতে হবে। জাকসু নির্বাচন বন্ধের পাঁয়তারা শিক্ষার্থীরা মেনে নেবে না।

স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলনের ভিপিপ্রার্থী আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, আমরা শুনতে পাচ্ছি একটি স্বার্থান্বেষী মহল নির্বাচনের ফল স্থগিতের চেষ্টা চালাচ্ছে। এমন কোনো কিছু করার চেষ্টা করা হলে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে প্রতিহত করব। প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের কাছে আমাদের দাবি ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে যেন ভোট গণনা শেষ করে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র করা হলে আমরা সেটা মেনে নেব না। প্রশাসনের বেঁধে দেয়া সময়সূচি পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব। আর ফলাফলে যে রায় আসবে তা আমরা মেনে নেব।

রাতের মধ্যেই ফল ঘোষণা হবে : প্রধান নির্বাচন কমিশনার : রাতের মধ্যেই জাকসু ও ২১টি হল সংসদের ভোট গণনা শেষে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো: মনিরুজ্জামান। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, রাতের মধ্যেই ভোট গণনা শেষ করে ফলাফল ঘোষণা করা হবে। তবে সেটার নির্দিষ্ট সময় নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। রাতের শেষভাগেও (ফল ঘোষণা) করা হতে পারে।

মনিরুজ্জামান বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকেই ভোট গণনা শুরু করা হয়েছে। ২১টি হলের মধ্যে ১৯টি হলের ভোট গণনা শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘জাকসু নির্বাচনের ভোট গণনা চলছে। আমরা দ্রুত ভোট গণনার জন্য জনবল বৃদ্ধি করেছি। প্রার্থীদের এজেন্টের সামনে স্বচ্ছতা বজায় রেখে ভোট গণনা করা হচ্ছে।’ তিনি জানান, নির্বাচন কমিশনের সাথে সংশ্লিষ্ট নেই এমন কাউকে ভোট গণনায় রাখা হয়নি।

Related News

চার দাবিতে কর্মসূচিতে যাচ্ছে জামায়াত, এনসিপিসহ আট দল

অবিলম্বে জুলাই সনদের বাস্তবায়নসহ চার দফা দাবিতে যুগপৎ কর্মসূচিতে...

উচ্চকক্ষ হোক জবাবদিহিমূলক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও চিন্তাশীল গণতন্ত্রের একটি দৃঢ় স্তম্ভ।

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে,...

রাকসুর মঞ্চে নতুন ইতিহাস

দীর্ঘ ৩৫ বছর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয়...